শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন
আহমেদ সাজু, সখীপুর, কালের খবর :
সখীপুরে আলোচিত স্কুল শিক্ষার্থী সামিয়া (৯) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ সাব্বির মিয়া (২১) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি উপজেলার দারিয়াপুর উত্তর পাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। সাব্বির পেশায় একজন মুদি দোকানদার। বুধবার রাতে পুলিশ তাকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।ঋণের টাকা জোগাড় করতে প্রথমে সামিয়াকে অপহরণ এবং পরে হত্যা করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সখীপুর থানা প্রাঙ্গণে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মো. কায়সার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।পুলিশ সুপার জানান, সন্দেহজনকভাবে মুদি দোকানদার সাব্বির মিয়াকে বুধবার রাতে সখীপুর থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সাব্বির হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।সাব্বিরের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, সাব্বির ব্যক্তিগতভাবে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য পাওনাদাররা তাকে নানাভাবে অপমান করে। পরে সাব্বির এলাকার যে ব্যক্তির কাছে নগদ টাকা আছে তার সন্তানকে অপহরণের সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনার দিন সকালে সামিয়া যখন প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ির দিকে রওনা দেয় তখন সাব্বির তার পিছু নেন।
বাড়ির কাছে নিরাপদ স্থানে এলে তিনি হাত দিয়ে সামিয়ার মুখ ও গলা চেপে ধরে একটি বাঁশঝাড়ের ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে সামিয়া তাকে ছেড়ে দিতে বলে এবং ঘটনা কাউকে বলবে না বলে সাব্বিরকে জানায়। কিন্তু সামিয়া তাকে চিনতে পারায় শ্বাসরোধে হত্যা করে বাঁশের পাতা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখেন। এরপর একটি নির্জন মাঠে বসে সামিয়ার বাবা রঞ্জু মিয়ার মোবাইল ফোনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি অডিও ভয়েস পাঠানো হয়। পরে সেদিন রাতেই লাশটি কাঁধে করে বনের ভেতরে নিয়ে একটি ড্রেনের মধ্যে রেখে কাদামাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়পুলিশ সুপার আরো জানান, পুলিশের কাছে সাব্বির মিয়া স্কুলছাত্রী সামিয়া হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তবে সামিয়াকে হত্যাকাণ্ডের কোনো পরিকল্পনা সাব্বিরের ছিল না। পাওনাদারদের অপমান সইতে না পেরে টাকা জোগাড় করতেই সামিয়াকে অপহরণ করে সে। চিনতে পারায় সামিয়াকে সে হত্যা করে।৬ সেপ্টেম্বর প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে সকাল সাড়ে ৭টায় দাড়িয়াপুর মাঝির চালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সামিয়াকে অপহরণ করা হয়। এরপর সামিয়ার বাবা রঞ্জু মিয়ার মোবাইলে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে একটি অডিও বার্তা পাঠানো হয়। ৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে বনের ভেতর একটি ড্রেন থেকে সামিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সামিয়ার বাবা রঞ্জু মিয়া বাদী হয়ে সখীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শরফুদ্দিন ও সখীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক মাসুদ রানা বলেন, ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে সাব্বিরকে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হবে।